বিশ্ব ইজতেমায় কোন ধরনের জঙ্গি হামলা বা হামলার কোন আশঙ্কা নাই-র‌্যাব মহাপরিচালক

স্টাফ রিপোর্টার :
র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব) মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমায় কোন ধরনের জঙ্গি হামলা বা জঙ্গি হামলার কোন আশঙ্কা নাই। আমরা এব্যাপারে সজাগ রয়েছি। আমরা আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার পেট্টোলিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছি। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় তিনি গাজীপুরের টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় র‌্যাবের কন্টোল রুমে ইজতেমায় নিরাপত্তা পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ব ইজতেমায় নিরাপত্তা নিয়ে র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, গাজীপুরের টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসল্লিদের আগমন ঘটে। এ বছরও প্রায় দুই ধাপে তিন দিন করে ইজতেমা মোট ৬দিন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপ শুরু হচ্ছে ২ ফেব্রæয়ারি থেকে ৪ ফেব্রæয়ারি এবং দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে ৯ ফেব্রæয়ারি থেকে ১১ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত। সুষ্ঠু ও নির্বিঘœ বিশ্ব ইজতেমার নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে র‌্যাব ফোর্সেস অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন গোয়েন্দা সংস্থার সাথে সমন্বয় করে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। ইজতেমা এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা সমুহে নিয়মিত টহল জোরদার ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করতে পর্যাপ্ত সংখ্যক র‌্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সামগ্রিক ভাবে আসন্ন বিশ্ব ইজতেমায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে র‌্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তর র‌্যাব-১সহ অন্যান্য পাঁচটি ব্যাটালিয়ান দায়িত্বরত থাকবে। ইজতেমা এলাকায় নিরাপত্তা সার্বক্ষণিক ভাবে মনিটরিং করতে কন্টোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া সদর দপ্তর থেকে সেন্ট্রাল কন্টোল রুম থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। ইজতেমাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ইউনিফর্মে টহল বৃদ্ধি করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি তল্লাশি কার্যক্রম করা হচ্ছে। যেকোন উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য র‌্যাবের স্পেশাল টিম বোম ডিসপোজাল ইউনিট এবং পর্যাপ্ত স্টাইকিং রিজার্ভ ফোর্স সার্বক্ষণিক ভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও র‌্যাবের হেলিকপ্টার পেট্টোল প্রদান করা হবে। বিশ্ব ইজতেমায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমগ্র ইজতেমা ময়দান ঘিরে র‌্যাবের অবজারভেশন পোস্ট স্থাপন করা হয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছেম যাতে সার্বক্ষণিক ইজতেমা এলাকা পর্যবেক্ষণ করা যায়। যেকোন অনাকাঙ্খিত ঘটনারোধ কল্পে দুই ধাপে আয়োজিত ইজতেমায় কঠোর সতর্কতা মুলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ইজতেমা এলাকায় আশপাশে উচ্ছঙ্খৃলতা, মাদকাসক্ততা, ছিনতাই, পকেটারমার ও মলম পার্টির দৌরাত্ম কমাতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিমানবন্দরে বিদেশী মেহমানদের হয়রানি নিয়ে তিনি বলেন, গত বছর বিমান বন্দরে টানা হেঁচরা হয়েছে। এটা অন্তত দুঃখজনক ও লজ্জার বিষয়। গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনারও বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। এবার এমনটা হওয়ার সুযোগ নেই। বিদেশী মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি বলেন, বিদেশী মুসল্লিদের বিদেশী খিত্তা এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ কল্পে সতর্ক দৃষ্টি ও নজরদারি রাখা হয়েছে। ইজতেমামুখী যানবাহন ও যাত্রীদের তল্লাশির জন্য চেরাগআলী বাসস্ট্যান্ড, টঙ্গী-কালীগঞ্জ রোড, উত্তরা নর্থ টাওয়ারের সামনে ও আশুলিয়া কামারপাড়া এলাকায় নিয়মিত চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়াও ইজতেমা এলাকায় র‌্যাবের চিকিৎসা কেন্দ্র সার্বক্ষণিক ভাবে সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। র‌্যাবের পর্যাপ্ত সংখ্যক মেডিকেল টিম, এ্যাম্বুলেন্সসহ ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের চিকিৎসা প্রদানে নিয়োজিত থাকবে, এছাড়াও বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা র‌্যাবের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমায় আখেরী মোনাজাতের দিনের মুসল্লিরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য র‌্যাবের নিছিদ্র নিরাপত্তা রাখা হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্র, ধর্ম নিয়ে অপপ্রচার, গুজব রোধে র‌্যাবের সাইবার উইং টিম অনলাইনে নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। আসন্ন ইজতেমাকে কেন্দ্র করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট করতে কোন ব্যক্তি স্বার্থ গোষ্ঠী মহলের অপচেষ্টা, অপপ্রচার কঠোর হাতে দমন করা হবে। আসন্ন বিশ্ব ইজতেমা সফল শান্তি পূর্ণ ভাবে সম্পন্ন করতে র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্মিলিত ভাবে দায়িত্ব পালন করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বিশ্ব ইজতেমায় আগত মুসল্লিসহ দেশের সকরের আন্তরিক সহযোগিতা একান্ত ভাবে কামনা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *