কালিয়াকৈরে হঠাৎ ঝড় শিলাবৃষ্টি একরাতে তছনছ গ্রামের পর গ্রাম

স্টাফ রিপোর্টারঃ
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শনিবার (২৩ মার্চ)রাতে হঠাৎ দুই দফায় ঝড়ো হাওয়া ও ভয়াবহ শিলাবৃষ্টিতে একরাতে তছনছ হয়ে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। বাড়িঘর ও গবাদি পশু রাখার ঘরেরর টিনের চাল ফুটো হওয়ায় বিপদগ্রস্ত ও দিশেহারা হয়ে পড়ঝে মানুষ। অপরদদিকে আম ও লিচু মুকুল, কাঁঠাল, মাঠের বোরো ধান, কলাবাগানসহ মৌসুমী ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে গ্রামের পর গ্রামের কৃষকের মাথায় হাত। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায় নি।

এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শনিবার রাতে হঠাৎ দুই দফায় ঝড়ো হাওয়া ও ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছে। গত শনিবার তারাবির নামাজ ও রাতের খাবার শেষে ঘুমিয়ে পড়েন গ্রামাঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ। রাত পৌনে ১০টার দিকে শুরু হয় ঝড়ো হাওয়া ও ব্যাপক শিলাবৃষ্টি। আবারও রাত ১টার দিকে আঘাত হানে ঝড়ো হাওয়া ব্যাপক শিলাবৃষ্টি। বসতঘরের টিনের চালা ফুটো হয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ে পড়ে ছোট-বড় শিলা। এর সঙ্গে ছিল বৃষ্টির পানিও। আঁতকে উঠেন ঘুমন্ত মানুষজন। মুহুর্তের মধ্যে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে বাড়িঘর, ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। কেউ কেউ ঘরের চৌকি, আবার কেউ কেউ টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্রের নিচে আশ্রয় নেন। নষ্ট হয়ে গেছর বৈদ্যুতিক লাইন, ঘরের আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল। এ অবস্থায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন গ্রামের পর গ্রামের মানুষ। দুই দফা য় ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আঘাতের কবলে টড়ে উপজেলার বহেড়াতলী, গাছবাড়ভ, সোনাতলা, কাথাচুড়া, চাবাগান, ঠেঙ্গারবান্দা, বোয়ালী, বর্মণপাড়া, ফুলবাড়িয়া, পাবুরিয়াচালা, বড়ইবাড়ী, কুটামনি, ডাকুরাইল, কোন্দাঘাটা, পিপড়াসিট, গোলুয়া, ঢোলসমুদ্রসহ বিভিনান গ্রাম।

এই ঝড় ও ভয়াবহ শিলাবৃষ্টির কবলে পড়ে এসব গ্রামের গরু রাখার ঘর ও গবাদিপশুও। শুধু তাই নয় ভয়াবহ শিলাবৃষ্টিতে আম ও লিচুর মুকুল, কাঁঠাল, মৎস্য খামার, মাঠের বোরোধান, কলাবাগানসহ মৌসুমী ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে গ্রামের পর গ্রামের কৃষকের মাথায় হাত বলেও জানিয়ে স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, কৃষকের এমন অবস্থায়ও কোনো খোঁজ-খবর রাখেনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা। অপরদিকে এই ঝড় ও শিলাবৃষ্টির পর থেকে বৈদ্যুতিক লাইন ক্রটি হয়ে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে এসব গ্রাম। ফলে বন্ধ রয়েছে রাইস মিল, মসলা গুড়োর মেশিন, ফ্রিজ, অনেকের মোবাইল ফোনসহ বৈদ্যুতিক ব্যবহার্য জিনিসপত্র।

ঠেঙ্গরবান্দ এলাকার সাংবাদিক ইমরাত হোসেন জানান, হঠাৎ করে রাতে দুই দফায় ঝড় ও ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে আমার ৮০হাত ঘরের টিনের চাল নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু আমার নয় গ্রামের বিভিন্ন লোকের ঘরের চালা ফুটো হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। সম্পূর্ণ টিনের চাল বদলাতে হবে, টিন না কোনো লোক তাদের ঘরে বসবাস করতে পারবেন না। এই শিলাবৃষ্টিতে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে। স্থানীয় এক ইউপি সদস্য মহসিন মিয়া বলেন, ভয়বহ শিলাবৃষ্টি হয়েছে। মাটিতে শিলার স্তুপ জমে গিয়েছিল। এরকম শিলাবৃষ্টি এর আগে কখনো দেখি নাই। অপর ইউপি সদস্য মফিজ উদ্দিন মোল্লা বলেন, অতিরিক্ত শিলাবৃষ্টিতে কিছু কিছু গ্রামের ঘরের টিনের চাল ঝাজড়া হয়ে গেছে। এছাড়াও গ্রামের পর গ্রামের মাঠের ফসল নষ্ট হয়ে কৃষকের ব্যাপত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৎস্য খামামীরাও ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়বে।

এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, আমাদের সুপারভাইজাররা জানিয়েছে ঝড়নও শিলাবৃষ্টিতে সব গ্রামের কৃষকের খুব ক্ষতি হয় নি। কিন্তু চাবাগানে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ব্যাপক হয় নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *