দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী যমুনা গ্রুপ ইলেক্ট্রনিক পণ্য তৈরী করছে এক দশক ধরে – যমুনা ইলেকট্রনিক পণ্য সহ দেশীয় ইলেক্ট্রনিক পণ্যের বাজার ও দেশীয় ইলেকট্রনিক পণ্য বিদেশি রপ্তানির সম্ভাবনা নিয়ে জাতীয় দৈনিকে কথা বলেছেন যমুনা গ্রুপ পরিচালক মনিকা ইসলাম।
প্রশ্ন : কবে থেকে আপনারা ফ্রিজ উৎপাদনে গেছেন? কত ধরনের ফ্রিজ আপনারা উৎপাদন করেন?
উত্তর: দেশীয় বাজারে রেফ্রিজারেটর ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবসায় আমাদের কোম্পানিগুলো দুই দশকের বেশি সময় ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছে। তবে ২০১৪সালে কনজ্যুমার ইলেকট্রনিকস জগতে যমুনার পথচলা শুরু । দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় যমুনা বিভিন্ন সাইজ, ডিজাইন, ধারণক্ষমতা ও সাশ্রয়ী দামে রেফ্রিজারেটর উৎপাদন করছে। আমাদের যমুনার রেগুলার রেফ্রিজারেটর ছাড়াও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার টেকনোলজির স্মার্ট ডাবলডোর, টি ডোর ও ক্রস ডোর রেফ্রিজারেটর রয়েছে।
প্রশ্ন : উৎপাদন ও বিক্রির দিক থেকে দেশে ফ্রিজের বাজারে আপনাদের অবস্থান কেমন?
উত্তর: প্রতি বছর ফ্রিজের বাজার ১৫-২০ শতাংশ বাড়ছে। বাংলাদেশের একমাত্র রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ড যমুনা, যার উৎপাদন ত্রুটি ১ শতাংশের নিচে। যমুনা ক্রেতাদের মাঝে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে। আমরা যে টার্গেট নিয়েছি তা অচিরেই যমুনার অবস্থান শীর্ষে থাকবে
প্রশ্ন : ফ্রিজ উৎপাদন খাতে আর কী ধরনের নীতি সহায়তা দরকার?
উত্তর: সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর পণ্যে অত্যধিক করারোপের ফলে ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদনকারীরা দেশে পণ্য উৎপাদন শুরু করেছে অনেক আগে থেকেই। দেশীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে বাজারে আধিপত্য বিস্তার করে আছে। অথচ একটা সময় এ শিল্প ছিল পুরোপুরি আমদানিনির্ভর। স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের ফলে উৎপাদন খরচ কমছে, যার ফলে সাশ্রয়ী দামে গুণগত পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছাচ্ছে। ভোক্তারাও দিনদিন দেশীয় পণ্যের প্রতি ঝুঁকছে।
প্রশ্ন : ভোক্তা ও উদ্যোক্তাদের রুচি-পছন্দের সঙ্গে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে তাল মেলাচ্ছে?
উত্তর: প্রযুক্তিগত যেকোনো পণ্যের ক্ষেত্রে ইনোভেশন বা উদ্ভাবন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘ইনোভেশন ফর স্মার্টার লাইফ’
আমাদের স্লোগানকে সামনে রেখে যমুনা রেফ্রিজারেটর তার উৎপাদন শুরুর প্রথম দিন থেকেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, উন্নত কাঁচামাল, দক্ষ জনবল দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন ও বিপণন করছে। যমুনা রেফ্রিজারেটর ক্রেতার রুচি ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধনে প্রতিনিয়ত কাজ করে। সময়ের পথপরিক্রমায় প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাপনে বেশ পরিবর্তন এসেছে। বর্তমান ব্যস্ত সময়ে অনেকেই স্বল্প সময়ে এবং সহজে গৃহস্থালির কাজকর্ম করতে চায়। নানাবিধ ইলেকট্রনিক পণ্য এ কাজটি সহজ করে দিয়েছে, যার মধ্যে ফ্রিজ অন্যতম।
প্রশ্ন : ফ্রিজের দাম কতটা বেড়েছে? মূল্যবৃদ্ধির পেছনে প্রধান কারণগুলো কী?
উত্তর: করোনা ও রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধে কারণে পৃথিবীর অনেক দেশের মতো আমাদের দেশেও ডলার–সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের ফলে পণ্য উৎপাদনে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও আমরা পণ্যের অতিরিক্ত দাম না বাড়িয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা মাথায় রেখে ক্রেতাদের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে দেশসেরা পণ্যটি তুলে দিচ্ছে।
প্রশ্ন : বিদেশে ফ্রিজ রপ্তানির সম্ভাবনা কেমন দেখছেন?
উত্তর: বাংলাদেশি ইলেকট্রনিকস পণ্যের গুণগত মান ও সরকারি নীতি সহায়তার ফলে বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার দিন দিন বড় হচ্ছে। বৈশ্বিক মন্দা ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সামগ্রিক রপ্তানি আয় কম হলেও ইলেকট্রনিকস খাতে ইতিবাচক রপ্তানি হয়েছে। রেফ্রিজারেটরসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্য পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিশ্বের বহু দেশে রপ্তানি হচ্ছে।