স্টাফ রিপোর্টারঃ
গাজীপুর মহানগরীর সালনা এলাকায় ছিনতাই ও অপহরণ কাজে কিশোরগ্যাংয়ের একাধিক গ্রুপ সক্রিয়। প্রতিনিয়ত এ গ্রুপগুলোর ছিনতাই ও অপহরণ বেড়েই চলেছে। গত এক মাসে ওই এলাকায় বেশ কিছু ছিনতাই ও অপহরণের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। পুলিশ বলছে অপরাধীদের সনাক্ত করে দ্রুত সময়ে আইনের আওতায় আনা হবে।
জানা গেছে, গত ৮ এপ্রিল নগরীর জোলারপাড় এলাকার বাসিন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান জুয়েল ইফতারের পর বাসা থেকে বের হয়ে সালনা এলাকায় তার এক বন্ধুর সাথে স্বাক্ষাত করতে যান। সেখান থেকে বাড়িতে ফেরার পথে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সালনা রেল লাইনের কাছে সিপাইবাড়ি রাস্তার মোড়ে আসার পর অজ্ঞাতনামা ৭/৮জন সন্ত্রাসী প্রকৃতির যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার গতিরোধ করে। এক পর্যায়ে তারা অহেতুক অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। প্রতিবাদ করিলে অজ্ঞাতনামা যুবকরা তাকে জোর পূর্বক ধরে সালনা কালাই বাড়ী জঙ্গলের ভিতরে নিয়ে যায় এবং তাকে দফায় দফায় মারধর করে। এরপর ওই যুবকরা তার সঙ্গে থাকা মানিব্যাগ থেকে নগদ টাকা এবং এনড্রয়েড মোবাইল ফোনসেট নিয়ে যায়।
এক পর্যায়ে তার ফোন দিয়ে তার মায়ের মোবাইলে ফোন দিয়ে ৪০ হাজার টাকা দাবি করে। বিষয়টি পুলিশ বা অন্য কাউকে জানালে খুন করার হুমকি প্রদান করে। পরে জুয়েলের মা জোলারপাড় বাজারের একটি দোকান হতে ছেলের বিকাশ নম্বরে ৩০ হাজার টাকা পাঠালে রাত ১০টার দিকে জুয়েলকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। পরে জুয়েলের মোবাইলে পাঠানো টাকাগুলো দুটি মোবাইল নম্বরে উঠিয়ে নেয় অপহরণকারীরা। এ ব্যাপারে সদর থানায় অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে মাহমুদুল হাসান জুয়েলের মা ঝর্ণা আক্তার জানান, ঘটনার পরপরই সদর থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। সদর থানার ওসি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধ্যান করছেন বলে তাকে জানানো হয়েছে। অপরাধীদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন ওসি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সালনা এলাকায় ৩-৪টি কিশোরগ্যাং গ্রুপ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। স্থানীয়রা জানায়, পোশাক কারখানার বেতন হওয়ার পর ১ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে এসব গ্যাংয়ের সদস্যরা শ্রমিকদের টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়। টাকা পয়সা দিতে না চাইলে তুলে নিয়ে জঙ্গলে আটকিয়ে রেখে তাদের মারধর করা হয়। ফোন দিয়ে স্বজনদের কাছে থেকে টাকা আনতে বলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সালনা এলাকার স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ও এক পোশাক শ্রমিক বলেন সালনা এলাকায় পাপ্পু গ্রুপ, মজনু গ্রুপ, রাতুল গ্রুপ ও সাইদুল গ্রুপ সক্রিয়। তারা নির্জন স্থানে অবস্থান করে সুযোগ বুঝে মানুষের টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়না।
সদর থানার ওসি সৈয়দ রাফিউল করিম জানান, ছিনতাইকারীরা জিম্মিকরে টাকা আদায়ের একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে পুলিশ কাজ করছে। অপরাধীদের সনাক্ত করে দ্রুত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এ ব্যাপারে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান বলেন, বিষয়টি পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। কেউ অপরাধ করে ছাড় পাবে না। তাদের খুঁজে বের করার জন্য পুলিশ কাজ করছে।
2024-04-15