কালিয়াকৈর প্রতিনিধি
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সেচ্ছায় বন বিভাগের জমি ছেড়ে দিলো একটি পোশাক কারখানার কতৃপক্ষ। বুধবার দুপুরে ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বন কর্মকর্তাদের ডেকে নিয়ে ওই জমি বুঝিয়ে দেন। তবে আশপাশের বনের জমি দখল মুক্ত না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী, কারখানা ও বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর রেঞ্জ অফিসের আওতায় প্রায় ২১ হাজার একর বনভূমি রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন শিল্প কারখানা, বিনোদন পার্কসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে বনের জমি দখলে রেখেছে প্রভাবশালীরা। তারা ওই অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে রমরমা ব্যবসা বাণিজ্য করে আসছে। এদের মধ্যে এপেক্স হোল্ডিং লিমিটেড নামে তৈরি পোশাক কারখানা নিলো ভিন্ন উদ্যোগ। গত কয়েক দিন আগে সীমানা নির্ধারণ করে ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ। বুধবার দুপুরে স্থানীয় বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেও ডাকেন ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যৌথভাবে সীমানা পিলার দিয়ে প্রায় দেড় শতাংশ বনের জমি ছেড়ে দেওয়া হয়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। বনের জমি সেচ্ছায় ছেড়ে দেওয়ায় প্রশংসায় ভাসছেন ওই কারখানার মালিক। সেই সাথে বনবিভাগের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, এ উপজেলায় সর্ব প্রথম স্থাপিত ওই কারখানায় কাজ প্রায় ১৮ হাজার শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। তারপরও কারখনার মালিক ওই বনের জমি সেচ্ছায় ছেড়ে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। কিন্তু কারখানার আশপাশে যারা বনের জমি দখল করে রমরমা বাণিজ্য করছে। মাসোয়ারা নিয়ে সেসব অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে স্থানীয় বন বিভাগ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তবে সেসব অবৈধ স্থাপনা দখল মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এদিকে ওই কারখানার এমন মহতি উদ্যোগে উপস্থিত ছিলেন- ওই কারখানার ডিজিএম রহমত-এ খোদা, কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল করিম, কালিয়াকৈর পৌরসভা প্যানেল মেয়র খাত্তাব মোল্লা, ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সামসুল হক, স্থানীয় মহিলা কাউন্সিলর নাজমা বেগম, ওই কারখানার হেড অব অপারেশন হুমায়ুন কবির, হেড-অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার রাকিব হাসানসহ বন বিভাগ ও কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ওই কারখানার ডিজিএম রহমতে-এ খোদা জানান, আমাদের কোম্পানী স্থানীয় হাবু মাতাব্বরের কাছ থেকে জমি কিনেন। কিন্তু তিনি প্রতারনার মাধ্যমে রেকর্ডীয়সহ কিছু বনের জমি কৌশলে বুঝিয়ে দেন। আমরা সেটা জানতে পেরে মালিকের নির্দেশে ওই বনের জমি সেচ্ছায় ছেড়ে দিয়েছি।
কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল করিম জানান, ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ সেচ্ছায় বনের জমি ছেড়ে দিয়ে প্রশংসার কাজ করেছেন। তবে খুব শিগ্রই অভিযান চালিয়ে পর্যায় ক্রমে অন্যান্য কারখানা ও বিনোদন পার্কসহ বিভিন্ন দখলকৃত জমি উদ্ধার করা হবে।
2024-01-31